কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিভিন্ন গ্রামে বাড়ির আঙ্গিনাসহ অনাবাদী জমিতে বস্তায় আদা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। চলতি বছর উপজেলার কালিকাপ্রসাদের ঝগড়ারচর, আতকাপাড়া, বাঁশগাড়ি, গজারিয়া ও মানিকদী ইউনিয়নে ছয় হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠের মধ্যে সারি সারি সাজানো রয়েছে আদার বস্তা। বস্তায় আদার ফলনও শুরু হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে এ বছর পতিত জমি, বসতবাড়ির আঙ্গিনা, কিংবা ভবনের ছাদেও বস্তায় আদা চাষ করছেন অনেকে।
চাষের জায়গাটি ছায়াযুক্ত হওয়ায় ফলনও ভালো। প্রতি বস্তায় ৩টি করে বীজ রোপণ করতে হয়। প্রতি বস্তায় এক কেজি করে হলেও ছয় হাজার কেজি আদা উৎপাদন হবে। যদিও একেকটি বস্তায় দেড় থেকে দুই কেজি আদা হওয়া সম্ভব।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষে লাভবান হবেন কৃষকরা। বস্তা প্রতি ৩০-৩৫ টাকা খরচ হয়। প্রতি বস্তায় গড়ে এক থেকে দেড় কেজি আদা উৎপাদন হয়। এ বিষয়ে কথা হয় কৃষক এনামুল হক, আব্বাস মিয়া ও আল আমিনের সঙ্গে। তারা বলেন, আমরা কৃষি অফিসের পরামর্শে বাড়ির আঙ্গিনা ও পতিত জমিতে বস্তার মাঝে আদা চাষ করেছি। প্রথমে ভেবেছিলাম বস্তায় আদা চাষ করে আবার না লোকসানে পড়ি কিনা। এখন দেখছি ফলন ভালো হচ্ছে। একেক বস্তায় মাত্র ৩০-৩৫ টাকা খরচ হয়। বস্তায় কম করে হলেও এক থেকে দেড় কেজি আদা উৎপাদন হয়। আমরা প্রায় দুই হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছি। বস্তায় আদা চাষ করা যায়, খরচও কম, এমনটা জানতে পেরে আগ্রহ বেড়েছে ভৈরবের একজন চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান কবিরের।
তিনি বলেন, আমি পেশায় চিকিৎসক। আমার পেশার পাশাপাশি কৃষির প্রতি আগ্রহ ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমার অনাবাদী জমিসহ বাড়ির আঙ্গিনাতেও বিভিন্ন সবজি বাগান আর ফলদ গাছ লাগিয়েছি। বস্তায় আদা চাষ এটা আমার কাছে নতুন পদ্ধতি বলে মনে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃষি অফিসার আকলিমা বেগমের পরামর্শ নিয়ে আমার বাড়ির আঙ্গিনাতে এক হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছি। খরচ মাত্র বস্তা প্রতি ৩০-৩৫ টাকা। এক হাজার বস্তায় কম করে হলেও আশা করছি প্রায় দেড় থেকে ২ হাজার কেজি আদা উত্তোলন করা যাবে। এটা সম্পূর্ণ দেশি জাতীয় আদা।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম বলেন, এ বছর ভৈরবে প্রায় ছয় হাজার বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ ও উঠান বৈঠকসহ সহযোগিতা দিয়ে আসছেন।
উপজেলার কালিকাপ্রসাদ, শিবপুর, গজারিয়া, বাঁশগাড়ি, মানিকদী গ্রামে অধিক পরিমাণে বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে বলে জানান কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম। তিনি জানান, এভাবে আদা চাষ করতে কৃষকদের মাত্র ৩০-৩৫ টাকা খরচ হয়। একেকটি বস্তায় এক থেকে দেড় কেজি আদা পাওয়া যায়। এভাবে আদা চাষ করলে ফলন ভালো হয়। পোকা মাকড়ের উপদ্রব হয় না। এতে কৃষকরা লাভবান হতে পারবেন।
সম্পাদক : মোঃ জহির , উপদেষ্টা : জসিম উদ্দিন খোকন ,বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: ফোন: 𝟎𝟏𝟔𝟐𝟗𝟏𝟎𝟎𝟗𝟐𝟔
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: 𝟎𝟏𝟔𝟎𝟖𝟔𝟗𝟕𝟖𝟗𝟗
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত